লঞ্চ দুর্ঘটনা, হারিয়ে যাওয়া শত লাশের দায়িত্ব কার?
মনির আহমেদ
পৃথিবীতে যাত্রা শুরুর পর থেকেই মানুষের বিভিন্ন বিষয়ে চাহিদা প্রকাশ পেতে থাকে। প্রয়োজনের আলোকে মানুষ আবিষ্কারও করেছে অনেক কিছু। নদী পথে যেমন যাতায়াতের প্রয়োজনে লঞ্চের আবিষ্কার ঘটেছে। লঞ্চ ছাড়াও নৌকা, ট্রলার, ষ্টিমার, স্পিড বোট নদী পথে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম।
দ্বিতীয় আদম খ্যাত হযরত নুহ (আঃ) এর নৌকা তৈরির মধ্য দিয়েই মানুষের পানি পথে চলাচল করার চিন্তা যোগ হয়। একে একে আবিষ্কৃত হয় অনেক বড় বড় যানবাহন। টাইটানিকের নাম আমরা সকলে শুনি। পৃথিবির সবচেয়ে বড় লঞ্চ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল এটি।
নদী পথে যাতায়াতের এতসব আবিষ্কারের গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, প্রায় ৫২ হাজার কোটি বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৃথিবীর দুই ভাগই জল, আর এক ভাগ স্থল। বিজ্ঞানীদের মতে, ২৯ ভাগ স্থল আর ৭১ ভাগ জলভাগ। বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি ছোট রাষ্ট্র। ১ লক্ষ ৫৬ হাজার বর্গ কিলমিটারের এ দেশের উল্লেখযোগ্য অংশ জলভাগ। যার কারণে বলা হয়- নদী মাতৃক বাংলাদেশ । যার উপর দিয়ে বয়ে গেছে পদ্ধা, মেঘনা, যুমনা, সুরমা, কুশিয়ারা, শীতলক্ষা, বুড়িগঙ্গাসহ অনেক নদী।
সড়ক পথ অতীতের চেয়ে বাড়লেও এখনও রাজধানীর সাথে অনেক জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নদীপথ। সুতরাং স্বাভাবিক কারণেই বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের একমাত্র যানবাহন ষ্টিমার, ট্রলার ও লঞ্চ। বাধ্য হয়েই অনেক মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে লঞ্চ, ট্রলার বা ষ্টিমারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতি বছরই আমরা দেখি, জলপথে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে এবং হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। ফলে অসহায় হয়ে যাচ্ছে অনেক পরিবার। একমাত্র উপার্জনোক্ষম পরিবারের কর্তা ব্যক্তিকে হারিয়ে পথে বসতে হচ্ছে হাজারো পরিবারকে।
সর্বশেষ গত কিছুদিন আগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে এম এল পিনাক- ৬ নামের একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। সাথে সাথে সেখানে ছুটে যান নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। সেই লঞ্চে তাঁর তিন ভাগ্নীও ছিলেন বলে পত্রিকায় খবর ছাপিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সমবেধনাও জানিয়েছেন। ২৫০ থেকে ৩০০ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা পিনাক থেকে লাশ পাওয়া যায় ৩৮-৪২ জনের। দেড়শতাধিক লাশের কোন হদিসই পাওয়া যায়নি। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা কয়েকদিন নদীর ধারে কান্নাকাটি করে কোন উপায় না পেয়ে শেষে ফিরে গিয়েছে। হা-হুতাশ আর চোখের পানিই এখন তাদের একমাত্র সম্বল ।
বিআইডব্লিউটির এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গত ৪৩ বছরে নৌ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৩১৬ জন যাত্রীর। এর মধ্যে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে শতাধিক। সবচেয়ে বেশী প্রাণহানির ঘটনা ঘটে গত বছর। তিনটি বড় দুর্ঘটনায় গত বছর মৃত্যু হয় এক হাজার ১০৫ জনের। সর্বশেষ ঘটলো মুন্সীগঞ্জের ঘটনা। অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে চলাচলকারী শতকরা ৮০ভাগ নৌযানেরই ফিটনেস নেই বলে ওই সমীক্ষা-প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ।
এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার। দুইশত মামলা নিষ্পত্তি হলেও দোষীদের কাউকেই শাস্তি দেয়া যায়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সংঘটিত নৌ-দুর্ঘটনা তদন্তে ৫ শতাধিক কমিটি গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন হয়নি। এবারও লঞ্চডুবির ঘটনায় অনুরুপভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও কম সময়ের মধ্যে দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখবে কিনা, আবার প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখলেও কতটুকু সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে তাই এখন দেখার বিষয় । বার বার লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটছে, মানুষ মারা যাচ্ছে। কোন বিচারই হচ্ছে না!
দুর্ঘটনার সাথে প্রকৃতপক্ষে কারা জড়িত? কাদের ইচ্ছায় আইনের তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই লঞ্চ চলাচল করছে? যে লঞ্চে ৮০-১০০ জন যাত্রী উঠার কথা ছিল, সেখানে কীভাবে ২৫০-৩০০ যাত্রি উঠছে? কারা লাভবান হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা এখন সময়ের দাবি।
ঈদের পূর্বে ২৪ তারিখে আমি মাওয়া ঘাট হয়ে খুলনা যাচ্ছিলাম। স্পিডবাটে সাধারণত ভাড়া ১৫০ টাকা। কিন্তু দিতে হলো ২৫০ টাকা। বোটে উঠেই ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম, ১০০ টাকা যে বেশী দিতে হলো এই টাকা কি বোটের মালিক পায়? তার সোজা উত্তর- না। তাহলে কারা পায় জানতে চাইলে বলে- কতৃপক্ষ। একইভাবে লঞ্চেও ভাড়া দ্বিগুন বা কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশী পরিশোধ করতে হয়েছে যাত্রীদের। প্রশ্ন হলো, কারা এই কতৃপক্ষ? মাঝে মাঝে কানকথা শোনা যায় মন্ত্রী থেকে শুরু করে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ দলীয় নেতারাই হচ্ছেন কর্তৃপক্ষের একেকজন। প্রতিদিন কত দিতে হয় মন্ত্রীসহ নেতৃবৃন্দদের? মাঝে মাঝে টাকার অঙ্কও শোনা যায় বাতাসে। গোমর ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়েই কি কখনো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হবে না?
হাঁ, মাশুল দিতে হবে শুধু জনগণকে। জনগণ এভাবেই একটার পর একটা হত্যাকা-ের বলি হবেন, আর দূর্ভাগ্যকে দোষারোপ করে প্রস্তুত হবেন পরবর্তী হত্যাকান্ডেকে দুর্ঘটনা বলে মেনে নিতে। কারণ, আমরা বাংলাদেশের জনগণ। এ দেশে সবচেয়ে মূল্যবান সরকারের গদি, আর সবচেয়ে মূল্যহীন মানুষের জীবন।
দিন যত যাচ্ছে জনসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের মানও বিশ্বব্যাপী তত বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোথায় উন্নয়ন? কিছু মানুষের চরিত্র আজো অপরিবর্তিত। তারা অর্থের জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। পদ্মায় সেতু হওয়ার কথা দিয়েছিল আওয়ামীলীগ সরকার। আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু তা হলো না। মার্কিন দূত ডব্লিউ ড্যান মজিনা বলেছেন, পদ্মাসেতু হলে এই লঞ্চ দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো। কিন্তু কেন পদ্ধা সেতু হলো না? এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে? তাহলে আমরা কি বলব, শুধু কিছু মানুষের অর্থের চাহিদা পুরণ করতেই বলি দেয়া হচ্ছে হাজারো মানুষকে। আমরা সমাধান চাই। অতি দ্রুতই পদ্মা সেতু হবে, এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাগব হবে; এই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক :সাংবাদকি ও লখেক
মনির আহমেদ
পৃথিবীতে যাত্রা শুরুর পর থেকেই মানুষের বিভিন্ন বিষয়ে চাহিদা প্রকাশ পেতে থাকে। প্রয়োজনের আলোকে মানুষ আবিষ্কারও করেছে অনেক কিছু। নদী পথে যেমন যাতায়াতের প্রয়োজনে লঞ্চের আবিষ্কার ঘটেছে। লঞ্চ ছাড়াও নৌকা, ট্রলার, ষ্টিমার, স্পিড বোট নদী পথে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম।
দ্বিতীয় আদম খ্যাত হযরত নুহ (আঃ) এর নৌকা তৈরির মধ্য দিয়েই মানুষের পানি পথে চলাচল করার চিন্তা যোগ হয়। একে একে আবিষ্কৃত হয় অনেক বড় বড় যানবাহন। টাইটানিকের নাম আমরা সকলে শুনি। পৃথিবির সবচেয়ে বড় লঞ্চ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল এটি।
নদী পথে যাতায়াতের এতসব আবিষ্কারের গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, প্রায় ৫২ হাজার কোটি বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৃথিবীর দুই ভাগই জল, আর এক ভাগ স্থল। বিজ্ঞানীদের মতে, ২৯ ভাগ স্থল আর ৭১ ভাগ জলভাগ। বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি ছোট রাষ্ট্র। ১ লক্ষ ৫৬ হাজার বর্গ কিলমিটারের এ দেশের উল্লেখযোগ্য অংশ জলভাগ। যার কারণে বলা হয়- নদী মাতৃক বাংলাদেশ । যার উপর দিয়ে বয়ে গেছে পদ্ধা, মেঘনা, যুমনা, সুরমা, কুশিয়ারা, শীতলক্ষা, বুড়িগঙ্গাসহ অনেক নদী।
সড়ক পথ অতীতের চেয়ে বাড়লেও এখনও রাজধানীর সাথে অনেক জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নদীপথ। সুতরাং স্বাভাবিক কারণেই বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের একমাত্র যানবাহন ষ্টিমার, ট্রলার ও লঞ্চ। বাধ্য হয়েই অনেক মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে লঞ্চ, ট্রলার বা ষ্টিমারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতি বছরই আমরা দেখি, জলপথে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে এবং হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। ফলে অসহায় হয়ে যাচ্ছে অনেক পরিবার। একমাত্র উপার্জনোক্ষম পরিবারের কর্তা ব্যক্তিকে হারিয়ে পথে বসতে হচ্ছে হাজারো পরিবারকে।
সর্বশেষ গত কিছুদিন আগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে এম এল পিনাক- ৬ নামের একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। সাথে সাথে সেখানে ছুটে যান নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। সেই লঞ্চে তাঁর তিন ভাগ্নীও ছিলেন বলে পত্রিকায় খবর ছাপিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সমবেধনাও জানিয়েছেন। ২৫০ থেকে ৩০০ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা পিনাক থেকে লাশ পাওয়া যায় ৩৮-৪২ জনের। দেড়শতাধিক লাশের কোন হদিসই পাওয়া যায়নি। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা কয়েকদিন নদীর ধারে কান্নাকাটি করে কোন উপায় না পেয়ে শেষে ফিরে গিয়েছে। হা-হুতাশ আর চোখের পানিই এখন তাদের একমাত্র সম্বল ।
বিআইডব্লিউটির এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গত ৪৩ বছরে নৌ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৩১৬ জন যাত্রীর। এর মধ্যে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে শতাধিক। সবচেয়ে বেশী প্রাণহানির ঘটনা ঘটে গত বছর। তিনটি বড় দুর্ঘটনায় গত বছর মৃত্যু হয় এক হাজার ১০৫ জনের। সর্বশেষ ঘটলো মুন্সীগঞ্জের ঘটনা। অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে চলাচলকারী শতকরা ৮০ভাগ নৌযানেরই ফিটনেস নেই বলে ওই সমীক্ষা-প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ।
এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার। দুইশত মামলা নিষ্পত্তি হলেও দোষীদের কাউকেই শাস্তি দেয়া যায়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সংঘটিত নৌ-দুর্ঘটনা তদন্তে ৫ শতাধিক কমিটি গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন হয়নি। এবারও লঞ্চডুবির ঘটনায় অনুরুপভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও কম সময়ের মধ্যে দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখবে কিনা, আবার প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখলেও কতটুকু সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে তাই এখন দেখার বিষয় । বার বার লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটছে, মানুষ মারা যাচ্ছে। কোন বিচারই হচ্ছে না!
দুর্ঘটনার সাথে প্রকৃতপক্ষে কারা জড়িত? কাদের ইচ্ছায় আইনের তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই লঞ্চ চলাচল করছে? যে লঞ্চে ৮০-১০০ জন যাত্রী উঠার কথা ছিল, সেখানে কীভাবে ২৫০-৩০০ যাত্রি উঠছে? কারা লাভবান হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা এখন সময়ের দাবি।
ঈদের পূর্বে ২৪ তারিখে আমি মাওয়া ঘাট হয়ে খুলনা যাচ্ছিলাম। স্পিডবাটে সাধারণত ভাড়া ১৫০ টাকা। কিন্তু দিতে হলো ২৫০ টাকা। বোটে উঠেই ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম, ১০০ টাকা যে বেশী দিতে হলো এই টাকা কি বোটের মালিক পায়? তার সোজা উত্তর- না। তাহলে কারা পায় জানতে চাইলে বলে- কতৃপক্ষ। একইভাবে লঞ্চেও ভাড়া দ্বিগুন বা কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশী পরিশোধ করতে হয়েছে যাত্রীদের। প্রশ্ন হলো, কারা এই কতৃপক্ষ? মাঝে মাঝে কানকথা শোনা যায় মন্ত্রী থেকে শুরু করে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ দলীয় নেতারাই হচ্ছেন কর্তৃপক্ষের একেকজন। প্রতিদিন কত দিতে হয় মন্ত্রীসহ নেতৃবৃন্দদের? মাঝে মাঝে টাকার অঙ্কও শোনা যায় বাতাসে। গোমর ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়েই কি কখনো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হবে না?
হাঁ, মাশুল দিতে হবে শুধু জনগণকে। জনগণ এভাবেই একটার পর একটা হত্যাকা-ের বলি হবেন, আর দূর্ভাগ্যকে দোষারোপ করে প্রস্তুত হবেন পরবর্তী হত্যাকান্ডেকে দুর্ঘটনা বলে মেনে নিতে। কারণ, আমরা বাংলাদেশের জনগণ। এ দেশে সবচেয়ে মূল্যবান সরকারের গদি, আর সবচেয়ে মূল্যহীন মানুষের জীবন।
দিন যত যাচ্ছে জনসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের মানও বিশ্বব্যাপী তত বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোথায় উন্নয়ন? কিছু মানুষের চরিত্র আজো অপরিবর্তিত। তারা অর্থের জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। পদ্মায় সেতু হওয়ার কথা দিয়েছিল আওয়ামীলীগ সরকার। আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু তা হলো না। মার্কিন দূত ডব্লিউ ড্যান মজিনা বলেছেন, পদ্মাসেতু হলে এই লঞ্চ দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো। কিন্তু কেন পদ্ধা সেতু হলো না? এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে? তাহলে আমরা কি বলব, শুধু কিছু মানুষের অর্থের চাহিদা পুরণ করতেই বলি দেয়া হচ্ছে হাজারো মানুষকে। আমরা সমাধান চাই। অতি দ্রুতই পদ্মা সেতু হবে, এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাগব হবে; এই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক :সাংবাদকি ও লখেক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন